Tuesday, April 29, 2014

জাতীয় নগ্ন দিবস ৪

জাতীয় নগ্ন দিবস ৩


আমি একটা সাধারন কোম্পানীতে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতাম। অনেকেই কানাঘুষা করে, তিন বছরের মাথাতেই প্রেম ব্যর্থতার কারনেই নাকি, সেই চাকুরীটাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। তারপর, নুতন কোন চাকুরীর সন্ধান করেছি বলে, কারোরই মনে হয়না। আর রাতারাতি, সেই গৃহবধুটির কেয়ার টেকার হবার ব্যাপারটিও যেমনি সন্দেহজনক ছিলো, ছয় মাসের ভেতর সংসদ সদস্য হবার ব্যাপারটিও আরো সন্দেহজনক হয়ে দাঁড়ালো। সবারই ধারনা, সেই গৃহবধু রুনুর স্বামীর বিদেশী আয় পুরুটাই আমার দখলে। তবে, মেজাজী প্রকৃতির আমার মুখের উপর যেমনি কেউ এই কথা বলতে পারেনা, ঠিক তেমনি মেজাজী মহিলা রুনুও এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পাত্তা দেয়না।

আমি কোন রাজনৈতিক দলের ব্যনারে নির্বাচন করিনি। নির্বাচন করেছি স্বতন্ত্র্য প্রার্থী হিসেবে। তারপরও বিপুল ভোটে বিজয়ের ব্যাপারটিও সন্দেহজনক। তবে, আড়ি পাতলেই শুনা যায়, আমি একটা সময়ে চটি লেখক ছিলাম। যদিও বাজারে আমার লেখা কোন বই খোঁজে পাওয়া যায়না, ইন্টারনেটে খোঁজলে কদাচিতই চোখে পরে। সেই হিসেবে ইন্টারনেটে আমার প্রচুর ভক্ত ছিলো। তাই, সবারই ধারনা, সেসব যৌন পাগলা ভক্তদের সমর্থনেই নাকি আমি নির্বাচন করেছে! আর তাদের সহযোগিতা আর প্রচারের কারনেই নাকি, ভোটেও জিতেছি।

আসলে, এত সবের পেছনে কার কত অবদান আমি বলতে পারবো না। অফিসে তখন একটু অমনোযোগীই থাকতাম। সব সময় রুনু আপার উপরই মনটা পরে থাকতো। সাধারন একটা ভুলের জন্যে, বস এর সাথে বড় ধরনের বাক বিতণ্ডাই হয়েছিলো। শেষ পর্য্যন্ত্য এক কথাতেই চাকুরীটা ছেড়ে দিলাম।অফিস ছেড়ে সেদিনও সোজা রুনু আপাদের বাড়ীতে চলে গিয়েছিলাম। বাজার থেকে ফিরেছে বুঝি। পরনে সংক্ষিপ্ত পোশাক, সাধারন একটা হাতকাট সেমিজ। বুকের উপর বাজারের ব্যাগটা চেপে ধরে আছে। আমাকে দেখে রুনু আপা বলেছিলো, কেনাকাটা অনেক করেছি। কিন্তু রান্না হতে অনেক দেরী। নিশ্চয়ই ক্ষুধা লেগেছে? টমেটো খাবে?

এই বলে রুনু আপা পুটলীটা থেকে একটা কাঁচা টমেটো বেড় করে মুখে পুরে দিলো।

আমি আহলাদ করেই বললাম, যদি খাইয়ে দাও।

রুনু আপা বললো, তুই কি শিশু নাকি, মুখে তুলে খাইয়ে দিতে হবে?

আমি বললাম, আমি শিশু নই, তবে ধরতে পারো পক্ষী শাবক। হাতে তুলে দিলে খাবো না। তোমার মুখ থেকে যদি খাইয়ে দাও, তাহলেই খাবো।

রুনু আপা বললো, পাগল ছেলে! আয়, কাছে আয়। আমার মুখ থেকেই খাইয়ে দেবো।

আমি রুনু আপার কাছাকাছিই এগিয়ে গেলাম। তার মুখটার কাছে, আমার মুখটা বাড়িয়ে দিলাম। রুনু আপা সত্যিই তার মুখের ভেতরকার কামড়ানো টমেটোর টুকরাটা আমার মুখের ভেতর ঠেলে দিলো। তারপর বললো, জানিস, মানুষের মুখের ভেতর অনেক রোগ জীবানু থাকতে পারে। এমন করলে তো তোর রোগও হতে পারে।

আমি বললাম, রোগ যদি হয়ই, তাহলে তো তোমারও হবে। তুমি তো ওই মুখে প্রতিদিনই খাচ্ছো। আমার আগে তো তোমারই রোগ হবার কথা। আছে নাকি কোন রোগ?

রুনু আপা বললো, রোগ শোক কি বলে কয়ে আসে? থাক ওসব। সংসদ নির্বাচন এর দিন তো ঘনিয়ে এলো। নাম দিয়েছিস?

আমি বললাম, তুমি কি সিরিয়াস?

রুনু আপা বললো, সিরিয়াস মানে? এখনো কিছুই করিসনি? তোর হয়ে তোর ভক্তরা আমাকে কত বিরক্ত করে!

আমি অবাক হয়ে বললাম, ভক্ত? কারা? কিভাবে বিরক্ত করে?

রুনু আপা মুচকি হাসলো। বললো, তুই তো আমার বাড়ীতে এসে, আমার কম্পিউটারটাও ব্যাবহার করিস। লগ আউট তো আর করিসনা। তোর মেইল সব আমি পড়েছি। তোর মেইল বক্সে এত মেইল জমা, অথচ কোন উত্তর নেই। তোর হয়ে, আমি সব রিপ্লাই দিয়েছি। এমন কি তোর ভক্ত সংখ্যাও বাড়িয়েছি, তোর সব ভক্তদের এখন একটাই দাবী, একদিন এর জন্যে হলেও, সবাইকে ন্যাংটু দেখতে চায়। আর সেটা শুধু তুইই পারিস। সংসদ সদস্য হয়ে।

আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, বলো কি? তোমার মাথা খারাপ হয়েছে?

রুনু আপা বললো, মাথা আমার খারাপ হয়নি। টাকার কথা ভাবিসনা। ইলেকশন করতে যত টাকা লাগে, সব আমি দেবো। তুই শুধু সিদ্ধান্ত নে।

আসলে, সংসদ সদস্য হবার জন্যে। রুনু আপার অবদানই বেশী ছিলো। সংসদ নির্বাচন করার জন্যে প্রচুর টাকা খরচ করতে রাজী হলেও, আমার এক পেয়ালা মদ এর টাকা দিতেই শুধু কার্পণ্য করতো। আর নিষেধাজ্ঞআ ছিলো, গগনটিলায় গিয়ে যেনো নেশা করে বাড়ী ফিরে না আসি।



জাতীয় নগ্ন দিবস ৪

No comments:

Post a Comment